ইউরোর ট্রেডের বিশ্লেষণ এবং পরামর্শ
যখন MACD সূচকটি উল্লেখযোগ্যভাবে শূন্যের নিচে নেমে গিয়েছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.1565-এর লেভেল টেস্ট করেছিল, যা এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করেছিল। এই কারণে, আমি ইউরো বিক্রি করিনি এবং এর ফলে এই পেয়ারের বেশ কার্যকর একটি নিম্নমুখী মুভমেন্ট কাজে লাগাতে পারিনি।
গতকাল ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির (FOMC) অক্টোবর মাসের বৈঠকের বিবরণ প্রকাশিত হয়, যেখানে দেখা যায় যে ফেডারেল রিজার্ভের বেশিরভাগ কর্মকর্তারা চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার পক্ষেই রয়েছেন। সামগ্রিকভাবে, ফেডের অভ্যন্তরে মতবিরোধ স্পষ্টভাবে ভবিষ্যতের মুদ্রানীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দেয়। আসন্ন নতুন প্রতিবেদনের ফলাফল এবং ফেডের প্রতিনিধিদের সাম্প্রতিক বিবৃতির দিকে নজর রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে, যেন ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা যায় এবং মার্কেটে পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে সিদ্ধান্তসমূহ সমন্বয় করা যায়। তবে, ডলারের আরও দর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা এখনও বিদ্যমান রয়েছে, বিশেষ করে যদি ফেড কঠোর অবস্থান বজায় রাখে।
আজ এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যা সম্ভাব্যভাবে মার্কেটে প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন জার্মানির উৎপাদন মূল্য সূচক, বুন্দেসব্যাংকের মাসিক প্রতিবেদন, এবং ইউরোজোনের ভোক্তা আস্থা সূচক। জার্মানির উৎপাদন মূল্য সূচকের ফলাফল উৎপাদন খাতে মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা প্রতিফলিত করে। এই সূচক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বোঝা যায় যে বর্তমানে কোম্পানিগুলো মুনাফা করতে কতটা চাপের মধ্যে রয়েছে এবং তা পণ্যের দাম ও জনসাধারণের পরিষেবার মূল্যের ওপর কী ধরনেরর প্রভাব ফেলতে পারে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ট্রেডাররা ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা পূর্বানুমান করতে এই সূচকগুলোর ফলাফল ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে।
বুন্দেসব্যাংকের নিয়মিত মাসিক প্রতিবেদনটিতে সাধারণত জার্মানির চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির গভীর বিশ্লেষণ, মূল পূর্বাভাস এবং সম্ভাব্য ঝুঁকির মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই প্রতিবেদনের ফলাফল অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসূত্র, যা ইউরোজোনের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতির দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে সহায়তা করে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা, মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রানীতি সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলো বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
ইউরোজোনের ভোক্তা আস্থা সূচক একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করে যা ভোক্তাদের মনোভাব প্রতিফলিত করে। এটি ভোক্তাদের ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক অবস্থা, কর্মসংস্থান এবং নিজস্ব আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রত্যাশা তুলে ধরে। এই সূচক বৃদ্ধি পেলে ইউরোর দর বৃদ্ধি পেতে পারে, অন্যদিকে দুর্বল ফলাফল EUR/USD পেয়ারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
দৈনিক কৌশল হিসেবে, আমি মূলত পরিকল্পনা #1 এবং #2 বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করব।

বাই সিগন্যাল:
- পরিকল্পনা #1: আজ যখন ইউরোর মূল্য 1.1625-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.1597-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরোর লং পজিশন ওপেন করতে পারেন। মূল্য 1.1625-এর লেভেলে গেলে, আমি লং পজিশন ক্লোজ করার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করব। আজ আসন্ন প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হলে ইউরোর দর বৃদ্ধি পেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ: এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং সেখান থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে।
- পরিকল্পনা #2: আজ MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1578-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি ইউরোর লং পজিশন ওপেন করার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। আমরা 1.1597 এবং 1.1625-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল:
- পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য 1.1578-এর (চার্টে লাল লাইন) লেভেলে পৌঁছানোর পর আমি ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করার করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1546-এর লেভেল যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি সেল পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর বাই পজিশন ওপেন করব। গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট লেভেল ব্রেক করে মূল্য নিম্নমুখী হলে আজ এই পেয়ারের উপর উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ: বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
- পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1597-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.1578 এবং 1.1546-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।

চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।